গিনেস বুকে প্রেন চ্যুং ম্রো
এক মিনিটে ২০৮ বার ফুটবল ট্যাপ
পা দিয়ে এক মিনিটে সর্বোচ্চ ২০৮ বার ফুটবল ট্যাপ করে গিনেস রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী প্রেন চ্যুং ম্রো ।
প্রেনের জন্ম বান্দরবান সদরের ৪নং সুয়ালক ইউনিয়নের লামার পাড়ায় । দুই ভাই আর তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি । মা-বাবা ছিলেন জুম চাষি। বাবা পিয়াচ্যং ম্রো একটি এনজিওতেও কাজ করতেন। ছোটবেলা থেকেই ভালো ফুটবল খেলতেন। পাসিং, ড্রিবলিংয়ে পাড়ার সমবয়সীদের কেউ পেরে উঠত না তাঁর সঙ্গে। এ জন্য অনেকেই ‘খ্যাপ’ খেলতে নিয়ে যেত প্রেনচ্যুংকে। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরের এক সকালের ঘটনা তাঁর জীবনটাকেই নাড়িয়ে দিল। মায়ের সঙ্গে জুমে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। পথে তাঁর মা হঠাৎ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকরা বলে দিলেন, তিনি আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন না। চিরদিনের জন্যই শয্যাশায়ী হয়ে গেছেন প্রেনচ্যুংয়ের মা তুময়েন ম্রো! প্রেনচ্যুং তখন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
মায়ের অসুস্থতা কিশোর প্রেনচ্যুংয়ের দুনিয়াটা বদলে দিল। পড়াশোনার সূত্রে অন্য বড় ভাই-বোনরা তখন এলাকার বাইরে। মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো ছেলেটি হঠাৎ ঘরবন্দি হয়ে পড়লেন। খাওয়ানো, গোসল করানো, পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে মায়ের সব কাজই সামাল দিতে হতো অতটুকু প্রেনচ্যুংকে। স্কুল থেকে ফিরে মাকে খাওয়ানো, গোসল করানোর কাজ করতেন। বিকেলে বন্ধুরা খেলতে ডাকত, কিন্তু যাওয়ার উপায় ছিল না। মায়ের অসুখের পর থেকে আর্থিক বিপর্যয় নেমে আসে পরিবারে। গয়না থেকে শুরু করে বেচার মতো যা ছিল, প্রায় সবই বিক্রি করতে হয়েছে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে। গৃহকর্তা পিয়াচ্যং ম্রোর একার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছিল সব সামলানো।ছেলে স্কুলে থাকার সময়টায় স্ত্রীর পাশে থাকতেন পিয়াচ্যং। এভাবে চাষবাস ও ঘরের কাজে বেশি সময় দিতে গিয়ে একসময় চাকরিটা হারালেন!
২০২২ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠে বান্দরবানের এই তরুণের। মিনিটে ২০৮ বার টোকা দিয়ে ফুটবল শূন্যে ভাসিয়ে রেখে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। প্রেনচ্যুং বলেন, ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ঘটনা সম্ভবত আমাদের বাংলাদেশের আদিবাসীদের থেকে এখন পর্যন্ত কারো নেই। ম্রো জাতিগোষ্ঠীকে কেউ তেমন একটা চেনে না। ফুটবলের মাধ্যমে তাদের দেশবাসীর সঙ্গে পরিচিত করাতে চাই।
এর আগে এক মিনিটে সবচেয়ে বেশি (১৯৭ বার) বার পা দিয়ে ফুটবল ট্যাপ করার রেকর্ডটি ছিল ঢাকার মুন্তাকিমুল ইসলাম নামে এক যুবকের । তিনি ১মিনিটে ২০৭ বার ফুটবল ট্যাপ করেছিলেন । চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই রেকর্ডটি করেন তিনি । এরপর সেই রেকর্ড ভেঙে দেয় প্রেন । ছোটবেলা থেকেই প্রেন ফুটবলপ্রেমী ছিলেন । অনেক চেষ্টা আর পরিশ্রমের ফলেই এই স্বীকৃতি মিলেছে বলে জানান প্রেন ।
No comments:
Jhu Jhu
Welcome to my blog. I don't know how much my blog will help you. Can not help as you like? Let me know your choice in the comments to get your choice. I will try to give your favorite poems and books. Thank you for coming to my blog, come back .